ক্লাসে এসে স্যার রোল কল করছে। গত কালকে তুলনায় আজ ছাত্র সংখ্যা একটু কম। তবে শেষের ছাত্র গতকয়েক দিন আসেনি তবে আজ ক্লাসে দেখা যাচ্ছে স্যারের হাজিরার ডাকে সারা দিচ্ছে,
: হাজির স্যার।
: গত কাল স্কুলে আসনি কেন?
: গায়ে জ্বর ছিল।
স্যার তাকে জিজ্ঞাস করলনা কেন তোমার জ্বর হয়েছিল কেনোই বা স্কুলে আসনি। তা না জিজ্ঞাস করে আবার বলে,
: তার আগের দিন আসনি কেন?
: স্যার আগের দিন স্কুলে আসার পথে আমি কাঁদায় পিচ্ছলে পরে গিয়েছিলাম।
: কাঁদা পরিষ্কার করে স্কুলে আসা গেল না।
: স্যার আমার একটি মাত্র প্যান্ট এর জন্য ...
: স্যারেরা কেন যে এই সব দিনমজুরের ছেলে মেয়ে স্কুলে ভর্তি করে। না পারে নিয়মিত স্কুলে আসছে না পারে প্রাইভেট পড়তে।
এ কথা শুনে রহিমরে একটু খারাপ লাগে। সে কিছুই বলে না। তবে সামনের সারি থেকে কে জেন বলে, স্যার গত কাল মিলাদের চাঁদা উঠানোর শেষ দিন ছিল রহিম চাঁদা দেয়নি। মিলাদের আর মা্ত্র দুদিন বাকি আছে।
রহিম বলে, স্যার আমি গত কয়েক দিন মিলাদের চাঁদা জোগার করার জন্য স্কুলে আসছে পারিনি, দিন মজুরের কাজ করেছি। টাকাটা আজ এনেছি।
“আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি...”
এসেম্বলি ক্লাসের সামানে দাড়িয়ে এক স্যার অন্য স্যারকে বলছে, স্যার এবার আমাদের স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে অনেক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছে।
: হুম, তবে এবার বুঝি ঝড়ে পরার হারটা একটু বেশী হবে।
: কেন স্যার?
: মার্চ মাস যেতে না যেতেই অনেকেই স্কুল কামাই দিচ্ছে। অনেকেই দিনমজুর হিসেবে কাজ করছে। : হুম। গতকাল লোকমান স্যার আসেনি তার ক্লাসে গিয়ে আমাকে ক্লাস নিতে হয়। দেখি অনেক ছাত্রই আসেনি। কি সমস্যা? এর কি কোনো সমাধান নেই?
: আছে, তবে একবারে সব সমস্যা সমাধান করা যাবে না।
রহিম স্কুলের স্যারদের খুব ভয় পায়। তাই সাহস করে স্যারদের কিছুই বলে না। স্যারেরা পড়া ধরলে বলে,
: পারি স্যার।
এ কথা শুনে স্যার বলেন,
: তুমি কি পার। হাঁসের ডিম নাকি মুরগির ডিম?
রহিম মন গম্ভীর করে বলে,
: স্যার পড়া পারি।
রহিমকে শ্রেণি শিক্ষক উপহাস করে বলে রহিম স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। একদিন শ্রেণি শিক্ষক দেখে রহিম রাস্তায় দিন মজুরের কাজ করছে। রহিম দেখেও না দেখার ভান করে চলে যায়। শ্রেণি শিক্ষক তাকে পিছন পিছন কতই না ডাকলো কিন্তু রহিম কোন কথা শুনল না। স্যারের নিজের কাছে নিজের খুব লজ্জা বোধা মনে হলো। স্যার অনেক চেষ্টার পরে রহিমকে স্কুলে ফিরিয়ে আনতে পারে। রহিম এখন আবার নিয়োমিত স্কুলে আসে। মাঝে রহিম স্কুল কামাই দিয়েছিল বলে অনেকেই তাকে উপহাস করে বলে, আবার স্কুলে আসছে।
সবাই প্রাইভেট পড়ে রহিম পড়ে না। সে জন্য লোকমান স্যার তাকে আনকমন ছাত্র বলে চিহ্নিত করে। এক দিন পরিক্ষার ফি দিতে অফিস রুমে গেলে কেরানি স্যার বলে,
: তুমি ভাল করে পড়বে। তোমার রোল তো ভালই।
ক্লাস টিচার্স শুনে বলে,
: এই সব ছাত্র আন কমন। কোন দিন ক্লাস করে না।
: স্যার আমি তো নিয়োমিত ক্লাস করি।
: কোন দিন তো দেখি না।
: পিছনের বেঁঞ্চে বসি বলে...
কেরানি স্যার বলে,
: তুমি কোন মন খারাপ করো না। ভাল করে পড়লেই ভাল ছাত্র হওয়া যায়। শুধু সামনের সারিতে বসলেই যে ভাল ছাত্র হওয়া যায় এমন না। ভাল ছাত্র হতে গেলে অধ্যাবসয় হতে হবে, তার পরেই না...
লোকমান স্যার একদিন ক্লাসে প্রিয় শিক্ষক রচনা পড়া দিয়েছিল সবাই নাম্বার বেশি পাবার আশায় শ্রেণি শিক্ষককেই প্রিয় শিক্ষক বানিয়ে ছিল কিন্তু রহিম তার রচনায় প্রিয় শিক্ষক আমার নাম (আব্দুল জলিল মোল্লা) লেখাতে লোকামান স্যার তাকে পরিক্ষার খাতায় নাম্বার কম দিয়ে দেয়।
অনেকেই বলে, ভাল নাম্বার পেতে হলে ক্লাস টিচার্স এর সুনাম করতে হবে, তার কাছে প্রাইভেট পড়তে হবে। রহিম প্রাইভেট পড়ে না বলে তাকে সামনের সারিতে বসতে দেওয়া হয় না। রহিমের ইচ্ছা থাকলেও সে সামনের সারিতে বসতে পারে না। সে একদিন দ্বিতীয় বেঁঞ্চে বসলে স্থানীয় এক ছাত্র এসে বলে,
: এখানে বসলি কেন?
: জায়গা পেয়েছি তাই।
: উঠে যা।
: কেন?
: এ সারি আমাদের জন্য। তুই পিছনের সারিতে বসবি।
: আমি আগে বসছি। আমি উঠব না।
একথা বলাতে সেই ছাত্র হাই বেঞ্চে উঠে রহিমের বুকের মধ্যে লাথি মেরে ফেলে দেয়। রহিম চোখ দিয়ে পানি গড়িযে পরে, অনেকেই দেখেও কিছুই বলে না। বারান্দা দিয়ে আমি যাচ্ছিলাম, সে আমাকে দেখে নাই কিন্তু আমি সব দেখি এবং ক্লাসে এসে বলি,
: তুমি কান্না করতেছ কেন?
: স্যার বেঞ্চে থেকে পরে গিয়ে ছিলাম, চোখে ময়লা লেগেছে তাই চোখ পানি আসছে। আমি আর রহিমকে তেমন কিছুই আর বললাম না। আমি চলে গেলাম।
রহিম আর একদিন সামনের সারিতে বসতে গেলে আবার ও মানা করে। অন্য ছাত্র স্যারকে বললে রহিমের কথা। শ্রেণি শিক্ষক বলেন, ওরা প্রাইভেট পড়ে তাই ওদের সামেনের সারিতে বসা উচিত।
সেই থেকে রহিমের সামনের সারিতে বসা ইতি দিয়েছে।
রহিমে যে ব্যাচে লেখা-পড়া করেছে, সেই ব্যাচে থেকে অনেকেই অনেক পোষ্টে চাকুরি পেয়েছে। কেউ শিক্ষক, ডাক্তার, মুহুরী, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, কৃষক, এমন কি রাজনিতিবিদ ও হয়েছে। রহিম ও করিম ওরা দুজনে খালাত ভাই একই স্কুলে পড়াশোনা করেও কেউ কাউকে পরিচয় দেয়নি। রহিম একটু অপরিষ্কা ছিল বলে তাকে স্কুলে কেউ দেখতে চাইত না। করিমও তাকে ভাই হিসেবে পরিচয় দিত না। একদিন করিম রহিমকে বলে,
: যদি শুনি তুই স্কুলে গিযে কাউকে বলছস আমি তোর খালাত ভাই তাহলে তোকে যে কি করব....
রহিম সেই ভয়ে করিমের কাছেই যেত না। পাঁচ বৎসর লেখা পড়া করেছে কিন্তু কেউ যানে নি রহিম ও করিম ওরা দুজনে খালাত ভাই।
এসএসসি পরিক্ষা রেজাল্টের পর আমি যখন দেখলাম রহিম জিপিএ ৫পেয়েছে। আমি তখন রহিমকে দেখতে পেলাম না। আর করিমও আমাদেরকে বলেনি রহিম আমার খালাতো ভাই। দুদিন হয়ে গেলো রহিম রেজাল্ট নিতে আর স্কুলে আসেনি। আর করিমও রহিমকে বলেনি তার পরিক্ষার রেজাল্টের কথা। রেজাল্টের দ্বিতীয় দিন যখন রহিম স্কুলে আসল না। তখন আমি নিজেই রহিমের খোজে রহিমের বাড়িতে যাই।
রহিমের সু-সংবাদটা দিতে গিয়ে আমার অনেক কষ্ট হয়েছিল। তবুও আমি গিয়েছিলাম। কিন্তু আমি রহিমের বাড়িতে গিয়ে দেখি রহিম নেই। আমি রহিম রহিম বলে ডাকতে থাকি! ঘর থেকে রহিমের মা বেড়িয়ে এসে বলে, কি হয়েছে। কে আপনি? আমাগো রহিম কি করেছে?
আমি বললাম, আমি রহিমের শিক্ষক।
আমার কথা শুনে রহিমরে মা বলে, কি অন্যায় করেছে আমাগো রহিম।
রহিমের মা আমাকে কোথায় বসতে দিবে তা ভেবে পাচ্ছে না। আমি আবার বললাম, রহিম জিপিএ ৫ পেয়েছে। তাই আমি খবর দিতে এসেছি। রহিম কোথায়?
রহিমের মা বলে, আমার ছেলেতো কখনোই মিথ্যা কথা বলেনা। আমার ছেলে ওটা পেলে আমাকে বলত। আপনেরা কোথাও ভুল করছেন। আমার ছেলে ও গুলো পায়নি।
আমি রহিমের মার কথা শুনে হতভঙ্গ হয়ে যাই। আমি আবার বললাম, আপনার ছেলে পরিক্ষা দিয়ে ভাল রেজাল্ট করেছে। তাই তার খবর বলতে এসেছি।
: ও তাই বলেন স্যার, আমি ভাবছি না জানি কি করেছে আমার রহিম।
: রহিম কোথায় গেছে? রহিমকে দেখতেছিনা।
: রহিম তার বাপের সাথে মাছ মারতে গেছে।
: কোথায়?
: গাঙ্গে!
: কত দূর হবে?
: বেশি দূর হবে না। ১০-১৫ মিনিট হাঁটলেই যাওয়া যাবে।
আমি রহিমরে খোজে নদীর ঘাটে যাই। রহিম আমাকে দেখে দৌড়ে কাছে এসে বলে, স্যার আপনি এখানে?
আমি রহিমকে বলি, তুমি তো পরিক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছ। রহিম আমার কথা শুনে বলে, সত্যি বলছেন স্যার। কবে দিয়েছে রেজাল্ট?
: গতকাল দিয়েছে। তুমি স্কুলে যাওনি।
: হুম স্যার। আমি জানতাম না। রেজাল্ট কবে দিবে। আর আমিও কোন খোজ খবর রাখিনি। তাছাড়া পরিক্ষায় পাস করলে বন্ধু বান্ধবদের মিষ্টি মুখ করাতে হবে।
: রহিম আগামী কাল কিন্তু স্কুলে দেখা করতে হবে। সবার সাথে দেখা করতে হবে।
রহিম পরের দিন স্কুলে গেলে সবাই তাকে দেখে উপহাস করে। ফেল যাবার পরেও স্কুলে আসছো?
রহিম কিছুই বুঝতে পারে না। রহিম আমার কাছে এসে বলে স্যার, আপনি বলেছিলেন, আমি পরিক্ষায় পাস করেছি। কিন্তু সব স্যার বলছে, আমি নাকি ফেল করেছি। তাহলে স্যার আমাকে আপনি মিথ্যা কথা বলেছেন কেন?
আমি রহিমকে বললাম তুমিই পাস করেছো। ঐ রহিম নয়। ঐ রহিম ফেল করেছে। এই যে তোমার রোল নাম্বার আমার কাছে আছে। এটা তোমার রেজাল্ট আমি সত্যি বলছি রহিম।
কিন্তু রহিম আমার কথা কিছুতেই শুনল না। রহিম আমাকে বলে, স্যার আপনিও আমাকে নিয়ে এ খেলাটা খেলবেন আমি বুঝতে পারিনি। আমি ফেল করেছি, ভাল ছিলাম কিন্তু আমাকে আপনি স্কুলে এনে এভাবে অপমান করাবেন আমি বুঝতেও পারিনি। স্যার আমি আপনাকে অনেক সম্মান করতাম, শ্রদ্ধা করতাম বলে তার প্রতিদান এভাবে দিবেন আমার জানা ছিলনা।
রহিম কান্না করতে করতে স্কুল থেকে চলে যায়। সব স্যারেরা আমাকেউ উপহাস করতে থাকে। পাস করে ছলিমুল্লার ছেলে রহিম আর জলিল স্যার বলছে জাউল্যার পুলা রহিম। হা হা হা!
যে ছলিমুল্লার ছেলে গত দুই বছর যাবত এসএসসি পরিক্ষা দিতেছে সেই কি করে এবার পরিক্ষাতে জিপিএ ৫ পায় আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। কেউ আমার কথা বিশ্বাসও গেলো না।
কি আর করার রহিম রেজাল্টের দিন আসেনি বলে, ছলিমুল্লার ছেলে রহিম জাইল্যার ছেলের রেজাল্ট নিযে আনন্দ করতে থাকে আর গ্রাম ছড়িয়ে দেয় ছলিমুল্লার ছেলে রহিম পাস করেছে। পরিক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে। এর প্রতিবাদ আমি করেছিলাম কিন্তু আমি একা পারিনি। সবাই সবলের প্রতি ছিল আর আমি ছিলাম দুর্বলের প্রতি কিন্তু কোনো কাজেই আসল না। রহিম একেবারেরই লেখাপড়া বাদ দিয়ে দিল। রহিম এখন আমাকে দেখলে মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
এসএসসি পরিক্ষার ছয়-সাত মাস পরে করিমদের বাড়িতে একটি অনুষ্ঠান হয়। তার সব বন্ধুকে দাওয়াদ দিয়েছে। সবাই আসবে। রহিমও তাদের বাড়িতে কাজ করতেছে। এক সময় করিম বলে, রহিম তুই এখন বাড়ি যা।
: কেন?
: খালাকে ডেকে নিয়ে আয়।
: মা তো আসবেই।
: তুই একটু যা। তাড়াতাড়ি আসার জন্য বলবি।
: এতো দুরে মাকে ডাকতে যাব। রহিম এই সময় দেখে করিমের সব বন্ধুরা আসতেছে। তখন রহিমরে স্বরণ হলো তাকে তো ওর বন্ধুরা দেখতে পারে না। আমি যে ফেল করা ছাত্র তাও আবার জা্ইল্যার পুলা। মান সম্মান বলে একটা কথা। তাছাড়া ওরা জানে না করিম আমার খালাত ভাই। আমি থাকলে হয়তো বা .... না আমি চলে যাই। আমার জন্য ওদের আনন্দ নষ্ট হতে দিব না।
সেইদিন আমার সাথে রহিমেরে রাস্তায় আবার দেখা হয়েছিল। রহিম আমাকে না দেখলেও আমি দেখি, পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বাবা বলে কেঁদে ফেলি। রহিম, তুই আমকে ভূল বুঝিস না। আমাকে মারস কাটস যাই করস আমাকে তোর বিশ্বাস করতে হবেই। সেই রেজাল্ট টা তোরই ছিল।
রহিম আমাকে বলে, স্যার আমি জানি। আমি পাস করেছি কিন্তু ওরা আপনাকে অপমান করুক আমি তা চাই নি। তাই তো আমি সেইদিন স্কুল থেকে চলে এলাম।
রহিমকে আমি কত বার বললাম, তুই আমার ছেলে হয়ে আর একবার পরিক্ষা দে, তোর কোনো টাকা পয়সা লাগবে না কিন্তু আমি রহিমকে কিছুতেই রাজি করাতে পারলাম না।
কে যেন টুইটারে “বন্ধুর জন্য ভালবাসা” নামে একটি গ্রুপ পেজ খুলে। সেই পেজের সদস্য প্রায় ২৫ জন্ হবে কিন্তু সেই পেজে কোন মেয়ে বন্ধু নেই। এটাই ওদের বন্ধু জন্য ভালবাসার বৈশিষ্ঠ্য। কে যেন রহিম কে ঐ পেজে এ্ড করে। রহিম তো দেখে অবাক। রহিম যখন পেজে লেখা লেখি করে তখন কেউ তার লেখার উত্তর দেয় না। বরং তার লেখা দেখলে অনেকেই পেজ থেকে বেরিয়ে যায়। অনেকেই পেজে লেখা শুরু করে, “আমি আর তোদের পেজে থাকব না।” গুড বাই বন্ধুর জন্য ভালবাসার পেজ। রহিম এ লেখা দেখে একজনের আইডিতে ডুকে লেখে,
: তুই কেন পেজ থেকে বেরিয়ে গেলি?
: আমার মোবাইলে অনেক ম্যাসেজ আসলে হ্যাং করে। তা্ই...
: ও তাই....। আমি আবার জয়েন্টে করে দিই।
: নারে বন্ধু। তুই বলছস তাতে আমি খুশি।
রহিম শুনে তো অবাক। এই প্রথম কেউ ওকে বন্ধু বলে ডাকল। তারপরে রহিম নিজেই তাকে পেজে এড করে দেয়।
রহিম আবার অন্য জনকে লিখে
: কিরে তুই পেজ থেকে বেড়িয়ে গেলি কেন?
: এমনিতে।
: নাকি আমার জন্য?
: না।
: আমি না হয় পেজ থেকে লিভ নিব, আমি জানি না আমাকে কে এই পেজে এড করেছে? তুই কেন লিভ নিলি পেজ থেকে? আমি তোকে এড করে দিই। তুই পেজে আসেক। দেখ তোর জন্য আমার কান্না হচ্ছে। আমি কিন্তু সত্যি সত্যি কান্না করতেছি।
: হোর পাগল....
: আমি সত্যি বলছি আমি কান্না করতেছি। তুই পেজে চলে আয় আমি পেজে আর থাকব না।
ঐ সময় থেকেই রহিম আর ঐ পেজে থাকে না। ধীরে ধীরে আবার সবাই পেজে এড হতে থাকে।
শীত কাল। রহিমের সোয়াইন ফ্লু হয়েছে। ডাক্তার বলেছে, শীতের সময় সাবধানে চলাফেরা করতে।
একটু পরের রহিমের পাশে তার ডাক্তার বন্ধু আসলে রহিম বলে,
: কেমন আছস?
ডাক্তার শুনে বলে, রহিম তুমি তাকে চিন নাকি?
: হ্যাঁ। আমাদের পাশের গ্রামের ডাক্তার। খুব ভাল। আমাদের এলাকায় একবার দরিদ্রদের জন্য একটি ক্যাম্প করেছিল মানুষের সেবা করার জন্য। আজাদ দরিদ্র মানুষকে খুব ভালবাসে।
একথা শুনে তার স্যার আজাদ কে জিজ্ঞাস করে, তাই নাকি আজাদ?
আজাদ বলে, স্যার ও একটু বাড়িয়ে বলছে।
রহিম সেখানে থেকে চলে আসে, কিন্তু পনের দিন পর আবার তাকে দেখা করতে বলা হয়।
: এই রহিম আমাদের এলাকায় কবে ডাক্তারেরা ক্যাম্প বসাইছিলরে?
: কই আমার তো মনে আসছে না।
: তুই তাহলে বললি, আজাদ আমাদের গ্রামে ক্যাম্প বসাইছিল।
: ও একটু বানিয়ে বলেছি। আজাদকে যাতে সবাই সম্মান করে তাই একটু বাড়িযে বললাম।
: এতো বড় মিথ্যা কথা।
: আরে দেখবি আজাদের স্যারই একদিন আমাদের এখানে আসবে তাদের ক্যাম্প নিয়ে।
সেই দিন রহিম আমার কথা শুনিনি। তবে আমার দেওয়া আদর্শ ও সকলের আর্শিবাদে রহিম অনেক ভাল আছে। আমি এখন গর্ব করে বলতে পারি, রহিম জাউল্যার পুলা ঠিকই কিন্তু সে একজন সফল মৎস্য খামারী। যা এক জন চাকুরীজীবির চেয়ে অনেক ভাল আছে। রহিম নিজে ১০ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। রহিম কাউকে ছোট করে দেখি না।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
কাউকে ছোট বা অবহেলা করা ঠিক নয়। কার মাঝে কি প্রতিভা লুকিয়ে আছে তা কেউ জানে না...
২৬ জানুয়ারী - ২০১৯
গল্প/কবিতা:
৭ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪